Sunday, December 11, 2011

AMRI fire: Toll rises to 93 with two more deathsশেষ মুহূর্তে ঘোষণা, হাওড়া স্টেশনের ফুটব্রিজে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট ৬

http://ganashakti.com/index.php

A West Bengal police constable and a female patient, rescued from the fire-ravaged AMRI Hospital in Dhakuria, died today taking the toll in Friday's inferno to 93. 
Constable Babulal Bhattacharya died at the AMRI Salt Lake Hospital where he was shifted from Dhakuria after the fire. 
Bhattacharya, a resident of Sonarpur in South 24-Parganas district, was admitted to AMRI, Dhakuria, with heart problems.
The other casualty was that of a female patient, who died at a city nursing home after she was evacuated from the AMRI hospital. 
Medical director of the Belle Vue Clinic P. K. Tondon said 82-year-old Neela Dasgupta died of natural causes. "She had myocardial infarction. It was a case of cardiac arrest," Mr. Tondon said. 
Her daughter, Jaya Dasgupta, is the state Development and Planning Secretary.

আর নয়

অসুস্থ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয় সুস্থ হয়ে ওঠার আশাতেই। কোনো পরিবার কি কখনও ভাবতে পারে তার আত্মীয় বন্ধুবান্ধবের জীবন কেড়ে নিতে পারে সেই হাসপাতাল? এরকমই একটি ঘটনার সাক্ষী হতে হলো কলকাতা শহরকে। এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকার হলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসংখ্য রোগী এবং হাসপাতালকর্মী। রোগীর বিছানায় শুয়ে অসহায় অবস্থায় বিষাক্ত ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে প্রাণ হারাতে হলো অসুস্থ মানুষজনকে। এই মর্মান্তিক ঘটনা কেড়ে নিল ৯১টি জীবন। কলকাতা কেন দেশের মধ্যেই যা নজিরবিহীন। বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ কলকাতার এ এম আর আই হাসপাতালে আগুন লাগে। মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠে এই হাসপাতাল। রাতে আগুন লাগার পর হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা ঝাঁপিয়ে পড়েন আগুন নেভাতে। দমকল এসে পৌঁছয় আরো একঘণ্টা পরে। গোটা বাড়িটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এবং কালো কাঁচে ঢাকা। আগুন লাগার পরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। অন্ধকার হয়ে যায় গোটা বাড়ি। ঘন কালো ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে আসে মুমুর্ষু রোগীদেরও। স্থানীয় মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢুকে পড়েন অসুস্থদের বাঁচাতে। বিষাক্ত গ্যাসে ছটফট করতে করতে রোগীরাও নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু হাসপাতাল পরিণত হয় গ্যাস চেম্বারে। ভোরের আলো ফোঁটার সঙ্গে সঙ্গে মৃতদেহে ভরে যায় গোটা হাসপাতাল। খবর পেয়ে ছু‍‌টে আসেন রোগীর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, পরিজন প্রতিবেশীরা। হাসপাতালে এসে তাদের অনেককেই দেখতে হয়েছে তাঁর প্রিয়জনের যন্ত্রণাবিদ্ধ মৃতদেহ।

টেলিভিশনের মাধ্যমে কিছুক্ষণের মধ্যেই এই ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে শহর ছাড়িয়ে গোটা দেশে। এই ঘটনার শোক জানানোর ভাষা খুঁজে পাননি মানুষ। গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে সর্বত্র। দুঃখ, শোক ও মনের যন্ত্রণার পাশাপাশি জনমানসে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও ক্রোধ। অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে ঘিরে। অদক্ষ কর্মীদের দিয়ে আগুন সামলানোর চেষ্টা হয়। ফলে দমকল ও পুলিসকে দেরিতে খবর দেওয়া হয়। হাসপাতালের সুনামের ক্ষতি হবে বলে এই মারাত্মক সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। তারই পরিণতিতে পরিস্থিতি আরো মারাত্মক আকার নেয়। নিচের একটি বেসমেন্টকে গুদামে পরিণত করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দমকল বিভাগ নোটিস দিয়েছিল ঐ বেসমেন্টটি খালি করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও সেই নির্দেশ কার্যকরী হয়নি। ঐ গুদাম এই আগুনের অন্যতম কারণ। বিদ্যুতের প্রধান সংযোগ অফ করে দেওয়ার ফলে বিপত্তি আরো বেড়ে ওঠে। এইরকম একটি বিরাট বেসরকারী হাসপাতালে প্রয়োজনীয় আগুন নিরোধক ব্যবস্থা ছিল না কেন? আগুন নেভানো বা এই ধরনের বিপদ মোকাবিলায় প্রশিক্ষিত কর্মী কেন রাখা হয়নি হাসপাতালে? উদ্ধারের কাজে চরম অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন। অসুস্থ রোগীদের দীর্ঘক্ষণ ধরে চরম অব্যবস্থার মধ্যে রাস্তাতেই পড়ে থাকতে হয়েছে। এই ঘটনায় প্রশাসন কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। ঐ হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করেছে সরকার। গ্রেপ্তার করা হয়েছে হাসপাতাল পরিচালকমণ্ডলীর ৭ জনকে। নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু মৃত ও আহতদের সুনির্দিষ্ট তালিকা এখনও মেলেনি। নিখোঁজ রয়েছে অনেক রোগী। অসুস্থ রোগীদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হলো তার স্পষ্ট জবাব মিলছে না কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। এই ঘটনা আমাদের সবাইকে শিক্ষা দিয়েছে। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রয়োজন। তদন্তের ভিত্তিতে দ্রুত এবং যথোচিত শাস্তি দিতে হবে দোষীদের। কিন্তু শাস্তি বা ক্ষতিপূরণই শেষ নয়। প্রয়োজন আগাম সতর্কতার। চরম অবহেলা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং অসতর্কতার পরিণাম হলো এই মর্মান্তিক এবং ভয়াবহ ঘটনা। কোনো পদক্ষেপই ফিরিয়ে দিতে পারবে না এই জীবনগুলি। এখনও অনেক হাসপাতালে এসব ব্যাপারে অবহেলা দেখা যাচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ভয়ঙ্কর ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে সমস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনকে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে।


শেষ মুহূর্তে ঘোষণা, হাওড়া স্টেশনের 
ফুটব্রিজে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট ৬

নিজস্ব সংবাদদাতা: হাওড়া, ১০ই ডিসেম্বর— শেষ মুহূর্তে লোকাল ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনের ঘোষণায় হুড়োহুড়িতে হাওড়া স্টেশনের ফুট ব্রিজে পদপিষ্ট হলেন ৬জন যাত্রী। এদের মধ্যে দু'জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাওড়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত দুই যাত্রীর নাম পদ্ম রথ (৫১) বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপে এবং উজ্জ্বল ভকত (২৮) বাড়ি হুগলী জেলার পুরশুড়ায়।

শনিবার বিকাল ৫টা ১০-এ হাওড়া স্টেশনের পুরানো কমপ্লেক্স-এর ১৪নং প্ল্যাটফর্ম থেকে মেদিনীপুর লোকাল ছাড়ার কথা ছিল। সেই অনুসারে সমস্ত যাত্রীরা ১৪নং প্ল্যাটফর্মে গিয়ে ভিড় করেন। কিন্তু ৫টা ২০ মিনিট হয়ে গেলেও ডাউন ট্রেন প্ল্যাটফর্মে না ঢোকায় মেদিনীপুর লোকাল ছাড়েনি। ৫টা ৩০ মিনি‍‌টে স্টেশনের মাইকে ঘোষণা করা হয় আপ মেদিনীপুর লোকাল নতুন কমপ্লেক্স-এর ১৭নং প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে। এর পরেই সমস্ত যাত্রী ফুটব্রিজ দিয়ে নতুন কমপ্লেক্স-এর দিকে ছোটেন। সরু ফুট ব্রিজে একসাথে এতলোক তাড়াতাড়ি করে যেতে গিয়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। এর জেরেই কয়েকজন যাত্রী পড়ে যান ফুট ব্রিজের উপরে। তাঁদের উপর দিয়ে চলে যায় অন্যযাত্রীরা। হাওড়া রেল পুলিস পদপিষ্ট চারজনকে উদ্ধার করে হাওড়া হাসপাতালে নিয়ে আসেন, সেখানে দু'জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দিলেও দু'জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করে নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের পায়ে, কোমরে ও বুকে আঘাত লেগেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় স্টেশনে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। যাত্রীদের অভিযোগ ভিড় ট্রেনের যাত্রীদের এইভাবে হয়রানি প্রায় প্রতিদিনই হতে হয়। বারবার এখানে দুর্ঘটনা ঘটলেও রেল কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না।

  • Cartoonist Mario Miranda passes away »
  • Climate conference approves landmark deal »
  • Anna Hazare begins third fast for strong Lokpal Bill »
  • Tension prevails as thousands of TN villagers take out march »
  • AMRI directors to appear before court »
  • Lokpal Bill tabled in Parliament»
  • 13th Meeting of International Communist and Workers' Parties »
  • Karzai blames Pak group for Shia shrine attack »
  • BSNL workers to strike on 15th December, 2011 »
  • Government puts FDI decision on backburner »
  • ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে রাশিয়ায় 
    প্রতিবাদ বিক্ষোভ

    সংবাদ সংস্থা

    মস্কো, ১০ই ডিসেম্বর — পুতিন জমানার অবসান চেয়ে শনিবার রাশিয়ার রাস্তায় নামলেন হাজার হাজার মানুষ। নির্বাচনে বেপরোয়া জালিয়াতির প্রতিবাদে তাঁরা সরব হয়েছেন। অন্তত ৪৮জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 

    নির্বাচনে ব্যাপকহারে অনিয়ম এবং জালিয়াতি হয়েছে বলে আগেই অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি সি পি আর এফের চেয়ারম্যান গেন্নাদি জুগানভ। জুগানভ বলেছেন, 'সবচেয়ে নোংরা নির্বাচন।' তিনি বলেছেন, 'এই নির্বাচন পুরোপুরি অবৈধ। আইনী, নৈতিক কোনও দিক থেকেই বৈধ নয়।' যেমন উত্তর ককেসাসে পুতিনের ইউনাইটেড রাশিয়া যেমন পেয়েছে ৯০শতাংশের বেশি ভোট। আবার মস্কোতে শাসক দল ৪৬শতাংশ ভোট পেলেও, তুশিনোতে, যেখানে বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে একমাত্র ব্যালট পরীক্ষা হয়েছে, সেখানে ভোট পেয়েছে সাকুল্যে ৩২শতাংশ ভোট। ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে মস্কোতে পুশকিন স্কোয়ার থেকে মিছিলের ডাক দিয়েছে সি পি আর এফ। বেপরোয়া ভোট জালিয়াতির পরেও সাধারণ নির্বাচনে প্রায় দ্বিগুণ ভোট বাড়িয়ে রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি (সি পি আর এফ) পেয়েছে ২০শতাংশ ভোট। বিপরীতে রীতিমতো ধসের মুখে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিনের ইউনাইটেড রাশিয়া। পায়নি এমনকি ৫০শতাংশ ভোটও। ১৯৯৯সালে ক্ষমতায় আসার পর নির্বাচনে এই প্রথম অত্যন্ত শোচনীয় পরিস্থিতিতে পুতিন। ইউনাইটেড রাশিয়ার প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৯.৫৪শতাংশ।

    প্রতিবাদ মিছিল থেকে নতুন নির্বাচনের দাবি উঠেছে। এদিকে এই প্রতিবাদ বিক্ষোভে ইন্ধন দেওয়ার জন্য মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টনকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন।

    বেহাল দশা মালতী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের,
    নেই চিকিৎসক, নার্স, দায় সামলান
    চতুর্থ শ্রেণীর দু'জন কর্মী

    নিজস্ব সংবাদদাতা

    পুরুলিয়া, ১০ই ডিসেম্বর — কর্মসংস্কৃতির উদাহরণ চান —? ঠিকানা বলরামপুরের মালতী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। মাঝে মাঝেই আসেন না চিকিৎসক এবং নার্সরা। গ্রুপ ডি-র দু'জন কর্মচারীই তখন ডাক্তার তারাই আবার ফার্মাসিস্ট। কারণ তাদেরকেই রোগের এবং রোগীর উপসর্গ শুনে ওষুধ দিতে হয়। কাজের সুবিধার জন্য কাগজে লেখা আছে কোনো রোগের ক্ষেত্রে কি কি ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। সেটাই 'ফলো' করেন তারা, এলাকার মানুষজনও জেনে গেছেন ডাক্তার দিদিমণি সবদিন আসেন না। তাই বাধ্য হয়ে দশ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে রোগীকে নিয়ে আসতে হয় বলরামপুর শহরের বাঁশগড় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এটাই হয়তো পরিবর্তনের পরিবর্তন।

    ১৯৯১ সালের ৩১শে মার্চ তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রশান্ত শূর উদ্বোধন করেছিলেন মালতী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের। মালতী, ধাদকিডি, বনডি, হুচুকডি, লোয়াডি, রাঙাডুংরি প্রভৃতি গ্রামের মানুষ এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন। পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের পাড়ডি, কায়রাতড প্রভৃতি গ্রামের মানুষও আসতেন চিকিৎসা করাতে। কিন্তু এখন? খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কেউ মালতী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসেন না। আগে যেখানে দৈনিক ১৫০-র উপরে রোগী হতো — এখন সংখ্যাটা ৩৫/৪০-এ দাঁড়িয়েছে। প্রসূতি মায়েদের জন্য রয়েছে আলাদা ডেলিভারি রুম। সে ঘরে ঢুকে বেডের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে কয়েক মাস ধরে সেই বেডে কোনো প্রসূতিকে শুতে হয়নি। ধুলোর পুরু আস্তরণ। ডেলিভারি রুমের দরজার তলার অংশ নেই। চেয়ার-টেবিলসহ বেশকিছু সরঞ্জাম একটা ঘরে তালাবন্দী। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চারদিকে জঙ্গলে ভরা। নেই বিদ্যুৎ, জলের ব্যবস্থাও। পুরানো ভাঙা পরিত্যক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কারণে গোটা এলাকাটা ভুতুড়ে চেহারা নিয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত কেউ না থাকার জন্য হামেশাই চুরি হয় সেখানে। দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে গ্রুপ ডি কর্মীরা নিত্য আসেন এবং উচিত নয়, এ নিয়ম নয় জেনেও রোগীদের ওষুধ দেন। অভিযোগ ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক নিয়মিত আসেন না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বলরামপুর শহরে থাকেন সেই চিকিৎসক ডাঃ জয়ন্তী মুর্মু। নার্স প্রতিভা মুর্মু আসেন ৪২ কিলোমিটার দূরের পুরুলিয়া শহর থেকে একই অভিযোগ সেবিকার বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিনিও আসেন অনিয়মিত। অবশ্য অ্যাটেনডেন্স খাতায় প্রত্যেক দিনই তাদের স্বাক্ষর থাকে। মাসের মধ্যে বেশ কয়েকদিন দুই গ্রুপ-ডি কর্মী পদ্মলোচন মুর্মু ও কুম্ভকর্ণ কুমারকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সামলাতে হয়।

    স্থানীয় বাসিন্দা সাধুচরণ সিং সর্দার, মাসিরাম সিংরা জানিয়েছেন, পরিষেবার কাজে তারা একেবারেই সন্তুষ্ট নন। বেশির ভাগ সময়েই তারা রোগী নিয়ে চলে যান বাঁশগড় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। গ্রুপ-ডি কর্মী পদ্মলোচন মুর্মু অবশ্য স্বীকার করেছেন চিকিৎসক এক নার্স মাঝেমাঝেই অনুপস্থিত থাকেন। বাধ্য হয়েই তারা রোগী দেখেন এবং ওষুধও দেন। বাকি সব করেন তারা। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর অবশ্য সংক্রামিত প্রতিশ্রুতি (!) পাওয়া গেছে।

    নির্বিকার সরকার

    সারা দেশে দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির প্রশ্নে কংগ্রেস দল একেবারেই নির্বিকার। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে বাজার দর নিয়ে মিথ্যা কৃতিত্বের প্রচারে ব্যস্ত তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সংসদে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার সময় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি দাবি করেন, 'তেমন দাম বাড়েনি। মাঝে বাড়লেও গত চার সপ্তাহ ধরে জিনিসপত্রের দাম পড়তির দিকে। কমেছে মুদ্রাস্ফীতির হারও।' এদিকে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করছে, মুখ্যমন্ত্রীর নজরদারির ফলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে না। সংসদে আলোচনায় অংশ নিয়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার বাজারে বাজারে ঘুরে দাম কমিয়েছেন। অনেককে কালো তালিকাভুক্ত করেছেন। ফড়েদের সরিয়ে তিনি কৃষকদের হাতে চেক তুলে দিচ্ছেন।' পশ্চিমবঙ্গে জিনিসপত্রের দাম কি সত্যিই গত ৬ মাসে কমেছে? কেন না ক্ষমতায় বসার কিছুদিন পর আচমকা একবারের জন্য একটি বাজার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। মিডিয়াবাহিনী সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই বাজার সফরে রাজ্যের কোথাও সামান্য দামও কমেনি। কোনো মজুতদারের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। গত ৬ মাসে গোটা রাজ্যে বাজারদর বেড়েই চলেছে। শীতের সবজি ওঠার জন্য সামান্য দামে হেরফেরের জন্য কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর এরাজ্যে ১১ জন কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন। কৃষিতে চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কৃষকরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ঐ সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কাজই শুরু হয়নি। প্রতিবাদ জানিয়ে অনেক কৃষক ধান পুড়িয়ে দিচ্ছেন। তারপরেও তৃণমূল সাংসদ তাঁর নেত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠছেন। 

    জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের অসহনীয় অবস্থায় সরকারের প্রতিক্রিয়া সম্পূর্ণ অমানবিক। অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি সংসদে একথাও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, দেশে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কমছে। এবং মুদ্রাস্ফীতি কমার কোনো লক্ষণ নেই। এই বক্তব্যের পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী বলেন, 'পরিস্থিতি কঠিন। কিন্তু সাপ ব্যাঙ খেতে হবে এমন অবস্থা হয়নি।' কংগ্রেস তৃণমূলের জোট সরকার কি তাহলে দেশের মানুষকে আগামীদিনে সাপ ব্যাঙ কীটপতঙ্গ খাওয়ানোর দিকে যাচ্ছে? কিছুদিন আগে যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিং আলুওয়ালিয়া মনে করেন, গ্রামে একজন মানুষ ২৬ টাকা পেলেই তার দিন চলতে পারে। আর শহরে দরকার হয় ৩২ টাকা। এই পরিমাণ অর্থের বেশি পেলেই তিনি দারিদ্র্যসীমার ওপরে চলে আসবেন। অর্থাৎ জিনিসপত্রের দাম কমানোর কোনো চেষ্টা না করে সম্পূর্ণ অমানবিকভাবে মানুষের ন্যূনতম প্রয়োজন অবাস্তব ভিত্তিতে স্থির করতে ব্যস্ত কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ জিনিসপত্রের দাম কমানোর ব্যাপারে দ্বিতীয় ইউ পি এ সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কালোবাজারি ও মজুতদারির বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর আইন তৈরি বা প্রয়োগের কোনো উদ্যোগই সরকারের নেই। কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। সেচের ব্যবস্থা সম্প্রসারিত না হওয়ায় কৃষকরা পড়ছে চরম সঙ্কটে। কৃষকদের নির্ভর করতে হচ্ছে বহুজাতিক সংস্থা-নির্ধারিত বীজ ও সারের দামের ওপর। অর্থমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য থেকে স্পষ্ট তারা ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের স্বার্থে ভরতুকি তুলে নিতে চলেছে। সরকার মানুষকে সস্তায় খাদ্য দেওয়ার বদলে পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝাতে চাইছে সরকারের কোনো দায় নেই। সব দায় প্রকৃতির। অতি বৃষ্টি বা অনাবৃষ্টির জন্য ফলন কম হলে কৃষিপণ্য তথা খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সরকারের আরো যুক্তি হলো ‍‌জোগান আর চাহিদার মধ্যে বিপুল পার্থক্যের জন্যই দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয়। ইউ পি এ সরকার কি বলতে চাইছে মানুষ কম খেলে চাহিদা বাড়বে না? সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় ইউ পি এ সরকারের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা গোটা দেশের কাছে স্পষ্ট। সরকারের নিষ্ক্রিয়তার ফলে দেশের মানুষের জীবনযন্ত্রণা প্রতিদিনই বাড়ছে। নির্বিকার সরকারের নীতির ফলে সাধারণ মানুষের সঙ্কট আরো বাড়বে।

No comments: