Sunday, February 27, 2011

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পাঁচ দিনের হেফাজতে নালকোর চেয়ারম্যান

শান্তি চাই  
শনিবার পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কলকাতা জেলা কমিটির ডাকে সুবোধ 

নারীঘাতী, শিশুঘাতী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সোচ্চার মিছিলে মহিলারা

নিজস্ব প্রতিনিধি

কলকাতা, ২৬শে ফেব্রুয়ারি- লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর মাত্র ৪৮ঘন্টার মধ্যেই মুণ্ডেশ্বরী নদীর তীরে একচিলতে ঘর, সংসার সব হারিয়েছিলেন তাপসী দলুই।

তৃণমূল হামলায় গুঁড়িয়ে যাওয়া, আগুনে ভস্মীভূত হওয়া ঘরের দাওয়ায় শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে শোলবাঘা গ্রামের সেই অসহায় গৃহবধূর বুক ফাটা কান্না- মিছিলের একেবার সামনে ধরা ব্যানারেই ছিল বর্বরতার চিহ্ন বয়ে বেড়ানো সেই ছবিটি। ছবিটির গায়েই লেখা, 'এ কিসের পদধ্বনি...নৈরাজ্য নয় শান্তি চাই'।

একেবারে সামনে এই ব্যানারটি রেখেই মহানগরীর রাজপথে তৃণমূলী-মাওবাদী হিংস্রতার বিরুদ্ধে ঘৃণা উগরে দিয়েই পথ হাঁটলেন মহিলারা। যেভাবে তৃণমূলী-মাওবাদী সন্ত্রাসের লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠছে মহিলা,শিশুরাও- সেই ভয়ঙ্কর প্রবণতার বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদী মিছিলে কোন স্লোগান ওঠেনি। কেননা সন্ত্রাস, নাশকতার বিরুদ্ধে নিজেদের সোচ্চার প্রতিবাদকে জানান দিতে মৌন মিছিলেই পা মেলালেন মহিলারা। রাজ্য জুড়ে তৃণমূলী-মাওবাদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কলকাতা জেলা কমিটির উদ্যোগে শুক্রবার বিকেলে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেল পর্যন্ত এই মিছিল হয়। নারীঘাতক, শিশু ঘাতক তৃণমূলী-মাওবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে স্লোগান লেখা ব্যানার, পোস্টারে সুসজ্জিত ছিলো এই মিছিল।

বামপন্থীদের সমর্থন করার অপরাধে লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরনো মাত্রই সব কিছু হারিয়ে সন্তানকে কোলে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাতে হয়েছিলো তাপসী দলুইকে। সেই শুরু- তারপর গোটা রাজ্যজুড়ে কোথাও মাওবাদী, কোথাও তৃণমূলী কোথাও বা কংগ্রেসী দুষ্কৃতীদের হাতে বারে বারে আক্রান্ত হতে হয়েছে এরাজ্যের মহিলা সমাজকে। চার বছরের কন্যা সন্তান সুমনার সঙ্গে আগুনে পুড়িয়ে খুন করা হয়েছে হুগলীর ধনিয়াখালির গ্রামের বাসিন্দা ঝরনা মাণ্ডিকে। ছেলে সি পি আই(এম) করে, শুধু মাত্র এই অপরাধেই বাঁকুড়ার বারিকুলের বাগডুবি গ্রামের বাসিন্দা নবীন হেমব্রমের ৮৫ বছরের বৃদ্ধা মা কমলা হেমব্রম ও ৫৬ বছর বয়সী দিদি সরস্বতী হেমব্রমকে ঘরের ভিতর খাটের উপর চিতা বানিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার মাওবাদী-তৃণমূলী সাক্ষীও রয়েছে রাজ্যবাসী। তথাকথিত পরিবর্তনের নামে যেভাবে সাধারণ গৃহবধূ থেকে শুরু আই সি ডি এসের কর্মী, প্রাথমিক শিক্ষিকা থেকে শুরু করে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী, এমনকি কর্মরত মহিলা পুলিসও যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন তৃণমূলের নেতৃত্বে তাতে উদ্বিগ্ন গোটা সমাজই। খুন, হামলার পাশাপাশি ধর্ষণ করে অপহরণের ঘটনাও বাদ যাচ্ছেনা মাওবাদী-তৃণমূলী নৈরাজ্যে। নারীঘাতক এই হিংস্রতার শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ভাষাকে আরো সংহত করতেই তাই রাস্তায় এরাজ্যের মহিলা সমাজ। 

গোটা রাজ্যবাসীকে শিহরিত করেছিলো ছবি মাহাতোর ঘটনা। জঙ্গলমহলের শালবনীর বাসিন্দা তিন সন্তানের জননী ছবি মাহাতোকে গণ-ধর্ষণ করে জীবিত অবস্থাতেই মাটিতে পুঁতে দিয়েছিলো মাওবাদী-তৃণমূলী জল্লাদ বাহিনী। প্রায় ২৭দিন পরে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয়েছিলো ছবি মাহাতোর পচা-গলা মৃতদেহটি। তবুও একটি শব্দও শোনা যায়নি তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির মুখ থেকে। এদিনে প্রতিবাদী মৌন মিছিল থেকে দাবি জানানো হয়েছে ছবি মাহাতোর অপরাধীদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে। বারাসতের ইভিটিজিং ঘটনার পরবর্তীতে স্টার আনন্দ চ্যানেলের বিতর্কসভায় যেভাবে এস এফ আই এর সমর্থক মৌসুমী ঘোষের উপর তৃণমূলীদের পৈশাচিক হামলা হয়েছিল তার প্রতিবাদ জানিয়ে লেখা পোস্টারও ছিলো এই মৌন মিছিলে। জঙ্গলমহলে মাওবাদী-তৃণমূলী বাহিনীর হাতে এখনও পর্যন্ত অপহৃত আই সি ডি এস কর্মী সম্প্রীতি মাহাতো, চুনীবালা রানা, অনিমা দেব সিংহ, প্রাথমিক শিক্ষিকা ফুলমণি মাণ্ডির এখনও কোন খোঁজ মেলেনি। মহানগরীর রাজপথে হাজারো মহিলার সেই সোচ্চার প্রতিবাদের মৌন মিছিল থেকে তাঁদের উদ্ধারের দাবিও জানানো হয়। এদিনের মিছিলে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সর্বভারতীয় নেত্রী বনানী বিশ্বাস, সংগঠনের কলকাতা জেলা কমিটির সভানেত্রী আনোয়ারা মির্জা, সম্পাদক লক্ষীমণি ব্যানার্জি, মহিলা নেত্রী কুমকুম চক্রবর্তী, বনবাণী ভট্টাচার্য প্রমুখ। মিছিলে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতির তরফে শ্যামশ্রী দাস, ফারজানা চৌধুরি, অগ্রগামী মহিলা সমিতির তরফে শর্বানী ভট্টাচার্য ।



ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পাঁচ দিনের হেফাজতে নালকোর চেয়ারম্যান

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি, ২৬শে ফেব্রুয়ারি— ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে নালকোর চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর অভয়কুমার শ্রীবাস্তব, তাঁর স্ত্রী এবং আরো দু' জনকে পাঁচ দিনের সি বি আই হেফাজতে পাঠালো দিল্লির এক আদালত। শনিবার দিল্লির এক আদালত এই রায় দিয়েছে। সি বি আই নালকো চেয়ারম্যানকে তাদের হেফাজতে নেওয়ার পরেই খনিমন্ত্রক শ্রীবাস্তবকে সাসপেণ্ড করেছে।

শুক্রবার অভয়কুমার শ্রীবাস্তব, তার স্ত্রী চাঁদনি শ্রীবাস্তব, দালাল ভূষণলাল বাজাজ এবং তার স্ত্রী অনিতা বাজাজের বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে সি বি আই প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের সোনার বিস্কুট উদ্ধার করে। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে নগদ প্রায় ৩০লক্ষ টাকা পাওয়া গেছে। 

বিশেষ সি বি আই আদালতের বিচারপতি ও পি সাইনি শনিবার চারজনকেই পাঁচ দিনের জন্য সি বি আই হেফাজতে পাঠিয়েছে। ভাটিয়া গ্রুপ অব কোম্পানিজ এর প্রধান জি এস ভাটিয়াকে অভয় শ্রীবাস্তবের কাছে নিয়ে এসেছিলেন ভূষণলাল বাজাজ। তাঁর থেকে শ্রীবাস্তব বিপুল অর্থ ঘুষ নিয়েছে বলে অভিযোগ। এছাড়াও কয়লা সরবরাহকারী এবং নালকো চেয়ারম্যানের মধ্যে যোগাযোগের কাজ করত বাজাজ।

লিবিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন, ২৬শে ফেব্রুয়ারি— লিবিয়ার রাষ্ট্রনেতা মুয়াম্মার গদ্দাফির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা এই কথা ঘোষণা করে বলেছেন, লিবিয়ায় হিংসার পরিস্থিতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং বিদেশ নীতির ক্ষেত্রে এক অস্বাভাবিক এবং অনন্যসাধারণ হুমকি হিসেবেই দেখা দিয়েছে। প্রসঙ্গত, এই ঘোষণার আগেই লিবিয়া থেকে মার্কিন নাগরিকরা অক্ষত অবস্থায় দেশে ফিরে এসেছেন। শুক্রবার ওয়াশিংটনে লিবিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার নথিতে স্বাক্ষর করেন ওবামা। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গচ্ছিত গদ্দাফি ছাড়াও তার তিন ছেলে, এক মেয়ে, ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং লিবিয়ার সরকারের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করবে দেশের প্রশাসন। 

শনিবারও বেনগাজিসহ লিবিয়ার পূর্বাংশের বেশ কিছু অঞ্চলে অশান্তি অব্যাহত রয়েছে। গদ্দাফির নেতৃত্বে গঠিত সরকারের পদত্যাগের দাবিতে হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে বিক্ষোভ জারি রেখেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজধানী ত্রিপোলি ছাড়াও অন্যত্র সেনাবাহিনী অভিযান চলছে। ইতোমধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে লিবিয়ার ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শুক্রবারই রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে একটি নথি বিলি করেছিল ব্রিটেন এবং ফ্রান্স।

অন্যদিকে লিবিয়া থেকে ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। শনিবার ভারতীয় সময় বিকেল ৪টে বেজে ১০মিনিট নাগাদ ত্রিপোলি থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান রওনা হয়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী শনিবারই রাত ১১টা বেজে ৪০মিনিটে বিমানটির নয়াদিল্লির বিমান বন্দরে অবতরণ করার কথা। শনিবার থেকে প্রতিদিন দুটি বিমানে করে ভারতীয়দের এই ভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।


বিশ্বভারতীকে বিশ্বের 'হেরিটেজ' করতে চায় কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিনিধি

কলকাতা, ২৬শে ফেব্রুয়ারি — এদেশের আরো আটটি স্থানকে 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট' হিসাবে চিহ্নিত করতে ইউনেস্কোর কাছে আবেদন জানালো কেন্দ্রীয় সরকার। এরমধ্যে পূর্ব ভারতে রয়েছে তিনটি কেন্দ্র, যার একটি এরাজ্যের বিশ্বভারতী। শনিবার মহাকরণে একথা জানান রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ।

সে কারণে ভবিষ্যতে বিশ্বভারতীসহ শান্তিনিকেতন-শ্রীনিকেতন এলাকায় কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিধিনিষেধ আরোপের প্রয়োজন হবে। এবিষয়ে শুক্রবারই আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার রিজিওনাল ডিরেক্টর, হেরিটেজ কমিশন এবং রাজ্যের পৌর সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। বৈঠক থেকে ঠিক হয়েছে, এবিষয়গুলি নির্দিষ্ট করতে গঠন করা হবে একটি কমিটি। যে কমিটিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য শান্তিনিকেতন-শ্রীনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত, পৌরসভার নির্বাচিত প্রতিনিধিরা থাকবেন। বিধিনিষেধ আরোপ এবং সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন বা পদক্ষেপ গ্রহণের স্বার্থেই এই কমিটি গঠন। সেই কমিটির কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্টই রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে পাঠাবে বলে জানান মুখ্যসচিব।

আশা‍‌ নেই

আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করে অর্থমন্ত্রী ঐ সমীক্ষায় বলেছেন, বিশ্ব বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অভ্যন্তরে মুদ্রাস্ফীতির চাপ আরও বাড়তে পারে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যে এখন যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে এবং উন্নত দেশগুলি যে 'ইজি মানি' নীতি অনুসরণ করে চলেছে তা দেশের মুদ্রাস্ফীতির হারকে আরও বৃদ্ধি করতে পারে। মুদ্রাস্ফীতির পরিণতি হলো এখন বাজেটে প্রকল্পভিত্তিক যে বরাদ্দ করা হবে তা আর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে না। ফলে রেল বা সাধারণ বাজেটে প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলির রূপায়ণ অর্থের অভাবে আটকে যেতে বাধ্য। মানুষের আশা আসন্ন বাজেটে মূল্যবৃদ্ধি মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা ঘোষণা করা হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে তাদের অসহায় অবস্থা ইতোমধ্যেই প্রকাশ করে দিয়েছে অর্থনৈতিক সমীক্ষায়। কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, দেশজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। দাম নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রেও সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। অথচ সরকার চাইলে আইন করে দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে পারে। একই সঙ্গে কালোবাজারি রুখতে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইছে না তা স্পষ্ট হয়েছে এ‍‌ই অর্থনৈতিক সমীক্ষায়। মূল্যবৃদ্ধি ঘটলে নিয়ন্ত্রণ তো দূরের কথা, খোলাবাজার অর্থনীতির পক্ষেই হাঁটতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।

আমাদের দেশের অর্থনীতিতে কৃষিক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান রয়েছে। সেই কৃষিক্ষেত্রের অবস্থাও যে অত্যন্ত বেহাল তা বেরিয়ে পড়েছে অর্থনৈতিক সমীক্ষায়। অর্থমন্ত্রী তার সমীক্ষায় জানিয়েছেন, চলতি আর্থিক বছরে কৃষিক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার হবে ৫.৪ শতাংশ। কিন্তু চলতি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রথম তিন বছরে কৃষিক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ২.০৩ শতাংশ। গত দুটি বছর ধরে কৃষিক্ষেত্রে বিকাশের হার নিম্নগামী। কেন্দ্রীয় সরকারের সামগ্রিক নীতি দেশের কৃষক ও কৃষি স্বার্থের বিরোধী। কৃষিতে সরকারী বিনিয়োগ কমেছে। কৃষককে বিদেশী রাসায়নিক সার কিনতে হচ্ছে অনেক বেশি দামে। অপরদিকে ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লক্ষ লক্ষ কৃষককে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হচ্ছে। কৃষিক্ষেত্রে সঙ্কট থেকে পরিত্রাণের কোনো দিশা দেখানো হয়নি অর্থ‍‍নৈতিক সমীক্ষায়। স্বভাবতই সাধারণ বাজেটও সেই পথেই যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক সমীক্ষার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ইউ পি এ সরকার তার সংস্কারপন্থী চরিত্র আরও প্রকাশ করে দিয়েছে। বামপন্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বাধা দিয়ে পেনশন বেসরকারীকরণ বিল ঠেকিয়ে রেখেছে। কিন্তু বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার ফাটকা বাজারে বিনিয়োগের লক্ষ্যে পেনশন বিল সংসদে পাস করাতে তৎপর হয়ে উঠেছে। দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে খুচরো বাণিজ্যে বিদেশী বিনিয়োগে আপত্তি করেছে বামপন্থীরা। কিন্তু আমেরিকার ইচ্ছানুসারে খুচরো বাণিজ্য প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের কাছে উন্মুক্ত করে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে কেন্দ্র। অর্থনৈতিক সমীক্ষায় এই নীতির কথাই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বেপরোয়াভাবে জমি অধিগ্রহণ, কর্পোরেটদের স্বার্থে পরিবেশ বিধি শিথিল করা, বিদ্যুতে ভরতুকি ছাঁটাই, শিক্ষাক্ষেত্রে আরও সংস্কার প্রভৃতি পদক্ষেপগুলি নিতে চলেছে কেন্দ্র। সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক সমীক্ষা সংস্কারের গতি আরও বৃদ্ধি করারই সুপারিশ করেছে। বামপন্থী তথা জনমতের চাপে দেশের অর্থনীতি উন্মুক্ত করার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকায় বিশ্ব মন্দার চাপ কম পড়েছে ভারতে। বর্তমান কেন্দ্রীয় নীতি দেশকে আরও বিপদের‍‌ দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

শুধু ত‍‌ড়িঘড়ি ব্যবস্থা

কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষায় কৃষিক্ষেত্রের শোচনীয় দশা স্পষ্ট হয়ে উ‍‌ঠেছে। বর্তমান সঙ্কট থে‍‌কে উত্তীর্ণ হওয়ার কোনো বিশ্বাসযোগ্য দিশা এই সমীক্ষায় নেই। কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে বৃদ্ধির হার পর পর কয়েক বছর মার খেয়েছে। তবুও আশা প্রকাশ করা হয়েছে চলতি আর্থিক বছরে (২০১০-১১) এই হার বেড়ে ৫.৪ শতাংশ হবে। কেন্দ্র যাই বলুক চলতি নীতি না বদলালে কৃষি উৎপাদনের হার স্থবির থেকে যাবে। অথচ দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো খুবই জরুরী। কিন্তু ইউ পি এ সরকার কৃষিক্ষেত্রে এবং খাদ্যদ্রব্য ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যসমূহের মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলায় কোনোরকম রাজনৈতিক সদিচ্ছা বা সদর্থক দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিতে পারেনি। সমস্যা যখন তীব্র হয়ে ওঠে তখন তড়িঘড়ি কিছু ব্যবস্থা নেয়। একটু উপশম হলেই আবার সেই অমার্জনীয় ঔদাসীন্য, স্থবিরতা। যেমন ধরা যাক যখন পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠলো তখন শহরের চারিদিকে ভেজিটেবল ক্লাস্টার বা শাকসবজি উৎপাদনের এলাকা গড়ে তোলা হবে। এরপর ধরা যাক গুদামের সমস্যা। অনেক সময় খাদ্যশস্য ও শাকসবজি খোলা আকাশের নিচে রাখতে বাধ্য হন কৃষকেরা। কারণ উপযুক্ত সংখ্যায় গুদাম বা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। একটি হিসাবে দেখা যাচ্ছে, নতুন গুদাম ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গেলে প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকা দরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি কি এই সমস্যা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন সোমবারের বাজেটে?

কৃষকদের কৃষিপণ্য বিপণনে কেন্দ্রীয় সরকার কতটা সাহায্য করবে? সম্প্রতি পেঁয়াজের বেলায় দেখা গেলো মহারাষ্ট্রের নাসিকের মতো পেঁয়া‍‌জ উৎপাদনকারী কেন্দ্রগুলিতে যতটা দাম নেমে গেছে খোলাবাজারে দাম তার তুলনায় অনেক বেশি। অর্থাৎ মধ্যবর্তী ব্যবসায়ীরা দুধের সর টেনে নিয়ে যাচ্ছে। গত বছরে কৃষকেরা আগের চেয়ে বেশি সংখ্যায় আত্মঘাতী হয়েছেন। কারণ অসংখ্য কৃষক বেশি দামে কৃষি উপকরণ কিনে এবং মাত্রাতিরিক্ত সুদে মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। অপরদিকে বাজার থেকে ফসলের উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন না। ফলে অবধারিতভাবে ভয়ঙ্কর ঋণ ফাঁদ। কৃষকেরা তাঁদের সংসার চালাবার জন্য চাষবাস করছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। যেখানে দেশের জনসংখ্যায় বিপুল অংশ চাষবাস ও সংশ্লিষ্ট জীবিকার সঙ্গে যুক্ত তাই কৃষকদের জীবনে সুস্থিতি না এলে দেশ কিভাবে এগোবে?

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা উচিত দেশের মানুষের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা জরুরী। এই নিরাপত্তা দিতে পারে সর্বজনীন গণবণ্টন ব্যবস্থা। কিন্তু ইউ পি এ সরকার এই ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার পরিবর্তে দুর্বল করতেই ব্যস্ত। উন্নয়নশীল দুনিয়ায় ক্ষুধার প্রাবল্য যে মাত্রায় বেড়েছে তা নজিরবিহীন। তাই আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা জরুরী। তার জন্য সরকারী হস্তক্ষেপ ও বি‍‌নিয়োগও দরকার। আন্তর্জাতিক বাজার অ‍‌নিশ্চিত হয়ে ওঠায় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি অবিলম্বে দরকার। কিন্তু পাশাপাশি এই উৎপাদন যাতে গরিব মানুষের কাছে সুলভ মূল্যে পৌঁছায়। এর জন্য ভরতুকি দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার যতই 'অক্ষমতা' প্রকাশ করুক না কেন খাদ্যশস্যের সর্বজনীন গণবণ্টন ব্যবস্থা করার ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের আছে। এখন দেখা যাক কেন্দ্রীয় বাজেট কি বলে?




৮ কোটি ২০ লক্ষ জনসংখ‌্যার মিশর আরব রাষ্ট্রের মধ্যে সর্ববৃহৎ। ঐতিহাসিকভাবে মিশর আরবের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রস্থল। মিশরের ঘটনা সমগ্র অঞ্চলজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেললো।

১৯৫২। অফিসারদের বিদ্রোহে উৎখাত হয় প্রাচীন ও অবক্ষয়ী রাজতন্ত্র। নাসের ও সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ধর্মনিরপেক্ষ আরব প্রজাতন্ত্র আরব জাতীয়তাবাদের প্রতি এক সঙ্কেত। পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদের রোষ সুয়েজ খালের দখলদারি নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। নাসেরের নেতৃত্বে মিশর জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের নেতৃত্বকারী সদস্য ছিল। কিন্তু সাতের দশকে মিশর নাটকীয়ভাবে তা থেকে সরে আছে। 

মার্কিন-ইজরায়েল ষড়যন্ত্রের কেন্দ্র ১৯৭০। আনোয়ার সাদাতের জমানায় মিশর পশ্চিমী শক্তির কাছে তার অর্থনীতিকে উন্মুক্ত করে। ওয়াশিংটনের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭৯-তে সাদাত ইজরায়েলের সঙ্গে কুখ্যাত চুক্তিতে সই দেন। মিশর-ইজরায়েলের এই জোট মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিনী নিয়ন্ত্রণের পক্ষে খুব জরুরী ছিল। সাদাতকে এবং পরবর্তীকালে মুবারককে নিজের তাঁবে রাখতে ওয়াশিংটন লক্ষ কোটি ডলার ঢেলে দেয়। এই জমানাকে মদত দিতেই আমেরিকা সেনাবাহিনীর জন্য ১.৩ লক্ষ কোটি ডলার অর্থ সাহায্য দেয়। প্যালেস্তাইনের আন্দোলনকে সামলে রাখতে ইজরায়েলের সঙ্গে মধ্যস্থতা করে চলে মিশর। গাজায় ইজরায়েলের অবরোধকে শক্তিশালী করতে গাজার সীমান্তে মিশরের কড়া নিয়ন্ত্রণ জারি হয় রাফায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই'-এ মিশর মুখ্য ভূমিকা নেয়। সি আই এ গোটা দুনিয়ার জেলে বন্দীদের অপহরণ করে গোপনে মুবারক জমানার মিশরে পাঠিয়ে গুপ্তচর সংস্থার মাধ্যমে জঘন্য অত্যাচার চালায়। এই ধরনের ঘটনায় মুবারক জমানার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অশুভ আঁতাত স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

কেন এই উত্থান?

২৫শে জানুয়ারি শুরু হওয়া কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়া, সুয়েজ ও অন্যান্য শহরের গণ-অভ্যুত্থানে তিউনিসিয়ার ঘটনার প্রভাব পড়ে। বিশ্বের তাবৎ সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয় যে তিউনিসিয়ায় বেন আলি জমানার পতন মিশরে গণ-অভ্যুত্থানের আগুন জ্বালে। তিউনিসিয়ার বিদ্রোহ মিশরের গণ-অভ্যুত্থানে অনুঘটকের কাজ করলেও এ কথা বললে ভুল বলা হবে যে মিশরের অভ্যুত্থান হঠাৎ, স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে যায়।

মুবারক জমানার শেষ তিন দশকের নয়া উদারনীতিতে জনগণ ব্যাপক বঞ্চনা ও যন্ত্রণার শিকার হন। একটি হিসাব বলছে যে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪৪ ভাগ দিনে ২ ডলারের কম খরচে প্রতিদিন জীবন অতিবাহিত করেন। বেকারী বিশেষত যুবকদের ক্ষেত্রে ভয়াবহ আকার নেয়। এই আক্রমণাত্মক সঙ্কটের ধাক্কায় কৃষকরা আরও দরিদ্র হয়ে পড়েন। মুবারক জমানা তার বন্ধু পুঁজিবাদ এবং একদল ধনতন্ত্রী যারা জমিসহ সমস্ত সম্পদ লুট করে তাদের তত্ত্বাবধানে সমাজের ধনী ও গরিবের মধ্যে এক সুস্পষ্ট বিভাজন তৈরি করে দেয়।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর বিরোধিতাকে দমন করা সত্ত্বেও মানুষের পাহাড় প্রমাণ আন্দোলন গড়ে ওঠে। শ্রমজীবী জনগণের আন্দোলনকে নির্মমভাবে দমন করা হয়। সরকারী মদতপুষ্ট ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া অন্য কোনো ট্রেড ইউনিয়নের অনুমতি দেওয়া হতো না। আশি ও নব্বই-এর দশকের ভয়ঙ্কর দমন-পীড়ন শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলন সংগ্রামকে দুর্বল করে তোলে। কিন্তু শেষ এক দশকজুড়ে শ্রমজীবীদের আন্দোলন সংগ্রাম মাথা তুলে দাঁড়ায়।

শ্রমজীবী জনগণের সংগ্রাম

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কায় মিশরের শ্রমজীবী জনগণ বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। শত শত কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ থেকে শ্রমজীবী জনগণের সংগ্রাম চরমে ওঠে। মহল্লা আল কুবরায় শ্রমজীবী জনগণের ৬ই এপ্রিল, ২০০৮-এর ঐতিহাসিক ধর্মঘট দিকচিহ্ন এঁকে দেয়। ২৮,০০০ শ্রমজীবী মানুষের বসতির এই ধর্মঘটের উপর নিদারুণ দমনপীড়ন নেমে আসে। কিন্তু এই মহল্লার সংগ্রাম দ্বীপাঞ্চলের শিল্প এলাকার একই ধরনের সংগ্রামকে সমৃদ্ধ করে তোলে। শ্রমজীবী জনগণের এই তীব্র সংগ্রামের ফলশ্রুতি হলো ২০০৯ সালের ৪৭৮টি শিল্প এলাকায় গড়ে ওঠা সংগ্রাম। যার মধ্যে নিকটবর্তী ১৮৪টি কারখানার প্রতিবাদী অবস্থান, ১২৩টি ধর্মঘট, ৭৯টি বিক্ষোভ এবং ২৭টি মিছিল।

বেড়ে ওঠা বেকারীর সাথে গত দু-বছরে বাড়ে রুটি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের যেমন চাল ও রান্নার তেলের দাম। এই ব্যাপক অর্থনৈতিক সঙ্কটই মুবারক জমানায় রাজনৈতিক সঙ্কটের প্রেক্ষাপট।

বিভিন্ন শাখার স্রোত

ইসলামী চরমপন্থীদের বেড়ে ওঠাকে দায়ী করে মুবারক জমানা। পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের কাছে গণতন্ত্রের দাবিতে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে চিহ্নিত করলো তাহরির স্কোয়ার। অনেকগুলি শাখায় গড়ে ওঠা সংগ্রাম মিলিতভাবে জন্ম দিয়েছে এই গণ- অভ্যুত্থানের। যুবক-যুবতীদের গড়ে তোলা ৬ই এপ্রিল কমিটির পক্ষ থেকে ২০০৮-এ মহল্লার শ্রমজীবীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করা হয়। এই গ্রুপ জনগণকে এই আন্দোলনে যুক্ত করবার কাজে নেতৃত্বকারী ভূমিকা পালন করে। শ্রমজীবীদের সংগ্রাম এবং সাধারণ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মধ্যে এই ক‍মিটির মাধ্যমে গড়ে ওঠা সংযোগ এক দৃষ্টান্ত। অন্য আর এক শক্তিশালী কমিটি হলো 'আমরা সকলে খালিদ সাঈদ' কমিটি। পুলিসী নির্যাতনে শহীদ যুবক খালিদের নামে এই কমিটি। স্বৈরজমানার বিরুদ্ধে নগারিক অধিকারের দাবিতে এই ক‍‌মিটি সংগ্রাম গড়ে তোলে। এই সংগ্রাম ক্রমশ মধ্যবিত্ত শ্রেণী যারমধ্যে থাকা পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী এবং কর্মচারীদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে। সংগ্রামের স্লোগান এবং দাবিগুলো নির্ধারিত হয় ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে। ২৫শে জানুয়ারি দিনটি পালিত হয় 'ক্রোধের দিন' হিসেবে। যার প্রথম দাবি ছিল ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ১২০০ ইজিপ্সিয়ান পাউন্ড বৃদ্ধি করতে হবে এবং বেকারদের জন্য ভরতুকির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্য দাবিগুলি ছিল জরুরী অবস্থার বিভিন্ন স্তরের অবসান, বন্দী মুক্তি, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং সংবিধানের পরিবর্তন। সর্ববৃহৎ বিরোধী দল মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষ থেকে এই সংগ্রাম গড়ে তোলা না হলেও তারা এর সঙ্গে যুক্ত হয়। এটি ছিল 'ন্যাশনাল—অ্যাসোসিয়েশন ফর চেঞ্জ' নামে গড়ে ওঠা এক মঞ্চ যা অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলে। এই দলগুলি মিলিতভাবে মহম্মদ এল বারাদেইকে কমিটির প্রধান করে তাঁর মাধ্যমে রাজ‍‌নৈ‍‌তিক পরিবর্তনের জন্য আলোচনা চালিয়ে যায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য : চরম ঝুঁকি

মিশরের এই জনপ্রিয় অভ্যুত্থান ওবামা প্রশাসনকে হতবাক করে দেয়। যদিও মিশরের মার্কিন কূটনীতিকরা 'উইকিলিকসে'র মাধ্যমে বলে মুবারক জমানার বিশ্বাসযোগ্যতা কমছে এবং মুবারককে ঘিরে থাকা একদল মানুষের সম্পদের পাহাড় গড়ে উঠছে, তথাপি মার্কিন নীতি প্রণয়নকারী সংস্থার কী ঘটেছে সে বিষয়ে কোনো হুঁশ ছিল না। গণ-বিক্ষোভের এক সপ্তাহ পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নেয় মুবারক ক্রান্তিকালীন সময়ের মুখোমুখি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় এমন এক পরিবর্তন যেখানে নতুন এক ব্যবস্থায় মার্কিন স্বার্থ সুরক্ষিত হবে এবং মিশরের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক টিকে থাকবে। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কুখ্যাত গোয়েন্দা প্রধান সুলেইমানকে ক্রান্তিকালিন সরকারের প্রধান হিসেবে পেতে চায়। কিন্তু মুবারক তাঁর সেপ্টেম্বরের মেয়াদ শেষ হবার আগে ক্ষমতা ছেড়ে যেতে অস্বীকার করেন। তিউনিসিয়াকে বাদ দিলেও মিশর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইজরায়েলের পক্ষে চরম ঝুঁকি। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থবাহী নীতিকে বাস্তবায়িত করে তোলা মিশরের জন্য এরা সবকিছু করতে প্রস্তুত। মিশরের শাসকশ্রেণী ও সেনাবাহিনীকে এই লক্ষ্যে ধরে রাখতে চায় মা‍‌র্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

ভ্রান্ত ধারণা

মিশরের ঘটনায় এক শ্রেণীর উর্দু মাধ্যমে এবং ভারতের কয়েকটি ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের পক্ষ থেকে উদ্দীপনাত্মক সাড়া আসে। উর্দু সংবাদপত্রের কয়েকজন কলাম লেখককে বলতে শোনা যায় মুবারককে সরিয়ে দেবার জন্য মিশরের অভ্যুত্থান প্রাথমিকভাবে আমেরিকারই কৌশল। কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয় অবিলম্বে পরিবর্তনের জন্য ওবামার অহ্বানকে। এরা ভুলে গেলেন যে, পুরো সপ্তাহজুড়ে চলা গণ-অভ্যুত্থানের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়ে মার্কিন প্রশাসন যাতে তাদের বিশ্বস্ত মুবারককে সরে না যেতে হয়। নিজেদের প্রভাব অব্যাহত রাখতে সেনাবাহিনীর সাহায্যে এক নতুন ধরনের জমানা গড়ে তুলে, যে জমানা মুবারকের মতোই মার্কিন স্বার্থকে সুরক্ষিত করে, এক গণতান্ত্রিক নির্বাচনে যেতে। সুতরাং ২৫শে জানুয়ারির গণ-অভ্যুত্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র—এ কথা অসার। সৌদি রাজতন্ত্রের জমানা উৎখাতের চিন্তা আসলে আরব জনগণের গণ-অভ্যুত্থানের ফসল। তাদের স্বৈরজমানা, যা ইসলামী মৌলবাদ এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রতি দরদের মিশ্রণ, এখন চ্যালেঞ্জের মুখে।

তৈরি হচ্ছে ইতিহাস

মার্কস লিখছেন, 'মানুষ তার নিজের ইতিহাস নিজে তৈরি করে, কিন্তু তারা নিজের ইচ্ছামতো তা করে না, তারা তাদের পছন্দের পরিস্থিতিতেও তা তৈরি করতে পারে না, কিন্তু অতীতের পরিস্থিতির প্রবাহেই তারা ইতিহাস গড়ে তোলে।' মিশরের জনগণ ইতিহাস তৈরি করেছেন কিন্তু সেই ইতিহাস তৈরি হয়েছে অতীতের ঐতিহাসিক ঘটনাবলী ও পরিস্থিতিজনিত কারণে। মিশরের ইতিহাস হল উপনিবেশ-বিরোধী সংগ্রাম, সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার। এর আরও এক ইতিহাস হেলা শ্রমজীবী জনগণের সংগ্রামের উপর নির্দয় নির্যাতন, সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়াকে নির্মমভাবে দমন করা। গত চারদশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিশ্বস্ত 'এজেন্ট' হয়ে থাকবার ইতিহাস। মিশরের মানুষ সাক্ষী কীভাবে নয়া-উদারনীতি তাদের জীবনকে কঠিন আঘাত দিয়েছে। জানুয়ারি ২৫-এর অভ্যুত্থান এইসব ঘটনারই প্রতিফলন। মিশরের জনগণের ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের লড়াই শুরু হলো ঠিকই কিন্তু আন্দোলনকে আরও জনমুখী করে তোলবার প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ। যেহেতু কোনো বিপ্লবী পরিবর্তন সম্ভব না হলেও পুরানো ব্যবস্থায় আর ফিরে যাওয়া যায় না। কতখানি পরিবর্তন আনা যাবে তা নির্ভর করবে শক্তি এবং ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের দৃঢ়তার উপর।

ফিদেল কাস্ত্রো

কিছুদিন আগেই আমি বলেছিলাম মুবারকের পতন পাথরে লেখা হয়ে গিয়েছে। এমনকী ওবামাও তাঁকে বাঁচাতে পারবেন না।

গোটা বিশ্ব জানে মধ্যপ্রাচ্যে কী চলছে। অবিশ্বাস্য গতিতে খবর ছড়িয়ে পড়ছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় আসা খবর পড়ার সময়ও রাজনীতিবিদদের নেই। ওখানে কী ঘটছে তার গুরুত্ব সম্পর্কে সকলেই সচেতন আছেন।

১৮দিনের হার না মানা লড়াইয়ের পর মিশরের মানুষ এক গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছেন। আরব দেশগুলির কেন্দ্রে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্রকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে। নিজের দেশের মানুষের ওপরই নিপীড়ন চালাচ্ছিলেন মুবারক। লুট করছিলেন নিজের দেশের মানুষকে। প্যালেস্তিনীয়দের শত্রু ছিলেন মুবারক। ছিলেন ইজরায়েলের সহযোগী। সেই ইজরায়েল যা এই দুনিয়ার ষষ্ঠ পরমাণুধর শক্তি। সেই ইজরায়েল যা সামরিক ন্যাটো বাহিনীর দোসর।

গামাল আব্দেল নাসেরের নেতৃত্বে মিশরের সামরিক বাহিনী রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনে সাধারণতন্ত্র গড়ে তোলে। ১৯৫৬ সালে ফ্র্যাঙ্কো-ব্রিটিশ এবং ইজরায়েলের আগ্রাসন থেকে দেশকে রক্ষা করে। সুয়েজ খালের কর্তৃত্ব ধরে রাখে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখে। 



তৃতীয় বিশ্বে মিশর অত্যন্ত সম্মানের আসন পেয়েছিলো। অর্জন করেছিলো শ্রদ্ধা। জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের অবিসংবাদী নেতা ছিলেন নাসের। এশিয়া, আফ্রিকা ও ওশিয়ানিয়ার খ্যাতনামা নেতৃত্বের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন তিনি। জাতীয় মুক্তি এবং পূর্বতন উপনিবেশগুলি থেকে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনই ছিলো এই আন্দোলনের লক্ষ্য।

মিশর বরাবরই জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সমর্থন ও শ্রদ্ধা পেয়েছে। ১০০'র বেশি দেশ এই আন্দোলনের শরিক ছিলো। এই আন্দোলনের সূত্রপাতের পর থেকে তিন বছর পর্যন্ত এ সংগঠনের সভাপতি ছিলো মিশর। এই লড়াইয়ে সদস্যা দেশগুলির সমর্থন মিলেছিলো। এখন মিশরে সেই আন্দোলনই দ্রুতগতিতে চলছে।

ক্যাম্প ডেভিড চুক্তিপত্রের গুরুত্ব কী ছিলো? এবং প্যালেস্তাইনের নায়কোচিত জনসাধারণ নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে কেন নিবেদিত প্রাণ ছিলেন?

ক্যাম্প ডেভিডে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জিমি কার্টারের মধ্যস্থতায় মিশরের নেতা আনোয়ার আল-সাদাত এবং ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিন দু'দেশের মধ্যবর্তী চুক্তিতে সই করেন।

বলা হয়, ১২দিন ধরে তাঁরা গোপন আলোচনা চালিয়েছিলেন এবং ১৯৭৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দু'টি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। একটি মিশর এবং ইজরায়েল-এর মধ্যে ও অন্যটি গাজা ভূখণ্ডে স্বশাসিত অঞ্চল তৈরির জন্য। আল সাদাত ভেবেছিলেন এবং ইজরায়েল জানত যে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক প‌্যালেস্তাইনের সদর দপ্তর হবে। প্যালেস্তাইন নিয়ে ব্রিটিশদের মতামত ঘোষণার সময় ১৯৪৭এর ২৯ নভেম্বর রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং ইজরায়েল ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের অস্তিত্ব মেনে নেয়।

দফায় দফায় আলোচনার পর মিশরের সিনাই অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারে ইজরায়েল রাজি হয়। শান্তি আলোচনায় প্যালেস্তিনীয় প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট আপত্তি তোলে ইজরায়েল।

প্রথম চুক্তি অনুযায়ী, আরব-ইজরায়েল যুদ্ধে দখল হওয়া সিনাই মিশরকে ফেরত দেয় ইজরায়েল।

দ্বিতীয় চুক্তি অনুসারে, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং গাজা ভূখণ্ডে স্বশাসিত অঞ্চল তৈরির ক্ষেত্রে আলাপ-আলোচনা চালানোর বিষয়ে দু'পক্ষই আগ্রহ দেখায়। ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক অঞ্চলের বিস্তার ৫,৬৪০ বর্গ কিলোমিটার। এই অঞ্চ‍‌লে ২১ লক্ষ মানুষের বাস। অন্যদিকে, ৩৬০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গাজা ভূখণ্ডের বাসিন্দা ১৫ লক্ষ মানুষ।

এই চুক্তিতে আরব দেশগুলি ক্রুদ্ধ হয় কারণ তাদের বিচারে প্যালেস্তাইনকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করেনি মিশর। এই প্যালেস্তাইনের অস্তিত্বের অধিকার রক্ষার প্রশ্নই দশকের পর দশক ধরে আরব রাষ্ট্রগুলির সংগ্রামের কেন্দ্রে ছিলো।

আরব দেশগুলির প্রতিক্রিয়া এতই তীব্র ছিলো যে অনেক আরব রাষ্ট্রই মিশরের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক ছিন্ন করে। এভাবেই ১৯৪৭-এর নভেম্বরে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রস্তাব মানচিত্র থেকে মুছে যায়। স্বশাসিত সত্তা কখনই তৈরি হয়নি। কাজেই স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে প্যালেস্তিনীয়রা তাঁদের অস্তিত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অনেক দুঃখকষ্ট তাঁদের সইতে হয়েছে। এবং এই যন্ত্রণার অবসান তিন দশক আগেই হতে পারত।

প্যালেস্তাইনের আরব জনগোষ্ঠী গণহত্যার শিকার। তাঁদের জমি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আধা-মরু অঞ্চলে তাঁদের জন্য পানীয় জলও ছিলো না। তাঁদের ঘরবাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। গাজা ভূখণ্ডে বিস্ফোরক মিসাইল, ফসফরাস এবং গ্রেনেড হানা চালানো হয় ১৫ লক্ষ মানুষের ওপর। এই ভূখণ্ড অঞ্চল স্থলভূমি এবং সমুদ্র দিয়ে ঘেরা। ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি নিয়ে এত কথা কেন যেখানে প্যালেস্তাইনের কোনও উল্লেখই নেই।

প্রতি বছর ইজরায়েলকে কয়েকশ' কোটি ডলার দামের অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মিশরের মতো এক আরব দেশকে মার্কিন অস্ত্র আমদানিকারক দ্বিতীয় দেশে পরিণত করে ফেলা হয়। কার বিরুদ্ধে লড়া‍‌ইয়ের জন্য? অন্য কোনও আরব দেশের বিরুদ্ধে? মিশরের নিজের দেশেরই মানুষের বিরুদ্ধে?

মিশরের মানুষ নিজেদের মৌলিক অধিকারকে সম্মান জানানোর দাবি তুলছিলেন। নিজের দেশের মানুষকে নিষ্পেষিত করে লুণ্ঠন করা রাষ্ট্রপতির ইস্তফা চাইছিলেন। এই আন্দোলনকে দমন করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষিত বাহিনী তাদের ওপর গুলি ছুঁড়তে দ্বিধা করেনি। শয়ে শয়ে মানুষ নিহত হয়েছেন জখম হাজার হাজার মানুষ।

যখন মিশরের মানুষ নিজের দেশের সরকারের কাছে ব্যাখ‌্যা চাইছিলেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বরিষ্ঠ আধিকারিকরা মিশরের আধিকারিকদের কোনও সম্মান না দেখিয়ে নিজেরাই উত্তর দিচ্ছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব বা তার গোয়েন্দা বিভাগ কোনও অবস্থাতেই কি মুবারক সরকারের চুরি নিয়ে কিছুই জানে না?

তাহরির স্কোয়ারে গণ-প্রতিরোধের সামনে সরকারী অফিসার বা গোয়েন্দাবাহিনী সুযোগ-সুবিধা এবং শয়ে শয়ে কোটি ডলারের ডাকাতি নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করতে পারেননি।

মিশরের মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া থেকেই ওদেশে বিপ্লবী জনপ্রিয় আন্দোলন হচ্ছে একথা কল্পনা করলে ভুল হবে। মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকি নিতে চায় না। সারারাতব্যাপী অনশনের পক্ষপাতীও মানুষ নয়। তারা তখনই ওপথে যায়, যখন তাদের আইনী এবং বস্তুগত অধিকারগুলি দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের এবং দেশের স্বার্থ বিরোধী জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তির কাছে খারিজ হয়ে যায়।

দারিদ্র্যের হার ইতোমধ্যেই প্রতিবাদী, তরুণ এবং দেশপ্রেমিক মানুষকে আঘাত করেছে। মানুষের সম্মান, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাস সবকিছুই আক্রান্ত হয়েছে।

কীভাবে তাঁরা নিজেদের সান্ত্বনা দিতেন যখন খাবারের দাম ঊর্ধমুখী, যখন ১ হাজার কোটি ডলার রাষ্ট্রপতি মুবারক এবং সরকার ও সমাজের সুবিধাভোগী অংশের জন্য বরাদ্দ ছিলো?

এই জায়গায় এ‍‌সে এ‍‌টি জানাই যথেষ্ট নয় যে এই সংখ্যা কতখানি বেশি। এই দাবিই ওঠা উচিত যে এই অর্থ দেশকে ফিরিয়ে দিতেই হবে।

মিশরের ঘটনায় ওবামাও চিন্তিত। তিনি মন্তব্য করছেন বা করার চেষ্টা করছেন যে তিনিই পৃথিবীর মালিক। মিশরে কী ঘটবে তা তাঁর নিজস্ব বিষয়। অন্যান্য দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলা তিনি এখনও ছাড়েননি।

ই এফ এ এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে .....তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদালা এবং তুর্কিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মধ্যপন্থী রিসেপ তাইপ এর্দোগানের সঙ্গে কথা বলেন। ''মিশরীয়রা যে 'ঐতিহাসিক পরিবর্তন' করেছেন তাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি। একাজের জন্য মিশরবাসীর প্রশংসাও করেছেন....''।

আমেরিকার প্রধান সংবাদসংস্থা এপি লিখেছে: ''মধ্যপন্থী, পশ্চিমী ঘেঁষা মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের খোঁজ চলছে যাঁরা ইজরায়েলের বন্ধু হতে চান এবং ইসলাম চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতা করে মানবাধিকার রক্ষা করতে চান.... ''মিশর এবং তিউনিশিয়ায় গণ-জাগরণে দুই দীর্ঘমেয়াদী মার্কিন সহযোগীর উৎখাতের পর ওবামা প্রশাসনের এই আশার তালিকা পূর্ণ হওয়া অসম্ভব। অনেকেই মনে করছেন এই গণ-অভ্যুত্থান আরও ছড়িয়ে পড়বে।''

''এই স্বপ্নর আর অস্তিত্ব নেই এবং এ স্বপ্ন আর শিগগির দেখা যাবেও না। এর একটি কারণ গত চার দশকে মার্কিন প্রশাসন দুনিয়ার সব থেকে বেশি টালমাটাল পরিস্থিতির অঞ্চলে স্থিতিশীলতা, প্রবহমানতা এবং তেল-এর কর্তৃত্বের জন্য মানবাধিকারের টুঁটি টিপে ধরেছেন।''

''শুক্রবার হোসনি মুবারকের বিদায়কে স্বাগত জানিয়ে ওবামা বলেছেন, মিশর আর আগের মতো থাকবে না।''

ওবামা বলেছেন, ''শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মাধ্যমে মিশরীয়রা নিজেদের দেশের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন এবং এভাবে বিশ্বেরও পরিবর্তন ঘটিয়েছেন।''

''আরব দুনিয়ার সরকারগুলি ভীত হয়ে পড়লেও মিশর ও তিউনিশিয়ায় সম্ভান্ত ধনীদের এতদিন ধরে ভোগ করে আসা ক্ষমতা ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা ছেড়ে দেওয়ার কোনও চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না....''

''গত মাসে তিউনিশিয়ার রাষ্ট্রপতি জিনে আল আবিদিন বেন আলি দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার একদিন পর মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি রডহ্যাম ক্লিন্টন কাতারে এক বক্তৃতায় আরব নেতৃত্বকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সংস্কার ছাড়া তাঁদের দেশের ভিত 'বালিতে তলিয়ে যাচ্ছে...''

তাহরির স্কোয়ারে মানুষজন বাধ্য হয়ে এসেছেন এমন নয়।

ইউরোপের প্রেসগুলির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: ''আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল তাহরির স্কোয়ারে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জড়ে হন। এখান থেকেই রাষ্ট্রপতি হোসনি মুবারক এর ইস্তফা চাওয়া হয়। বি বি সি-র রিপোর্ট বলছে, সেনা পুলিস পাঠিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা হলেও তারা এলাকা ছেড়ে যায়নি।''

রাজধানীর কেন্দ্রে কায়রো প্লাজাতে থাকা বি বি সি-র প্রতিবেদন জানিয়েছেন, আরও প্রতিবাদী মানুষের ঢল দেখে সেনাবাহিনীও স্পষ্টতই দিশেহারা হয়ে পড়েছিলো।....

তাহরির স্কোয়ারের একপ্রান্তে প্রতিবাদী মানুষ থেকে নিশ্চিত করেছিলেন যাতে তাঁদের দাবি মানা হয়।

মিশরে যাই ঘটুক না কেন, সাম্রাজ্যবাদ-এর সামনে এখন সব থেকে বড় সমস্যা খাদ্যশস্যের ঘাটতি যা আমি আমার আগের লেখায় বিশ্লেষণ করেছিলাম।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উৎপাদিত দানাশস্য এবং সয়াবিনের এক বড় অংশই জৈবজ্বালানির উৎপাদনে ব্যবহার করে। ইউরোপে একাজেই লক্ষ লক্ষ হেক্টর জমি ব্যবহৃত হচ্ছে।

অন্যদিকে, বিশ্বের ধনী, উন্নত দেশগুলির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জল এবং খাবারের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে যা বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে বেমানান। আগামী ৩০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর জনসমষ্টি গিয়ে দাঁড়াবে ৯০০কোটি। কোপেনহেগেন এবং কানকুন ‍‌বৈঠকের পর রাষ্ট্রসঙ্ঘ কিংবা পৃথিবীর সব থেকে প্রভাবশালী দেশগুলির সরকার বিশ্ববাসীকে এ তথ্য জানায়নি।

রাজনৈতিক অধিকার এবং সামাজিক ন্যায়ের জন্য মিশরবাসীদের এই সংগ্রামকে আমরা সমর্থন জানাই।

আমরা ইজরায়েলের মানুষের বিরুদ্ধে নই। আমরা প্যালেস্তাইনের মানুষের গণহত্যার বিরুদ্ধে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্যালেস্তাইনের অধিকারের পক্ষে আমরা।

আমরা যুদ্ধের পক্ষে নই বরং সমস্ত মানুষের শান্তির পক্ষে।





'কিউবা ডিবেট'-এ প্রকাশিত কাস্ত্রোর এই নিবন্ধের অনুবাদ করেছেন — পল্লব মুখোপাধ্যায়

নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২৬শে ফেব্রুয়ারি — রাজীব দাসের হত্যাকাণ্ডে তিন অভিযুক্তকে শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করলেন রাজ্য পুলিসের গোয়েন্দারা। মধ্যমগ্রাম স্টেশন থেকে দু'জন এবং বারাসত থেকে অপরজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোয়েন্দাদের ধারণা, ট্রাক ডাকাতি সেরে গত ১৫তারিখ গভীর রাতে বারাসত কোর্ট চত্বরে ভাগ-বাঁটোয়ারা করতেই তারা জড়ো হয়েছিলো। সেইসঙ্গে চলছিল মদ্যপানের আসর।...

>>>

নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২৬শে ফেব্রুয়ারি — এদেশের আরো আটটি স্থানকে 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট' হিসাবে চিহ্নিত করতে ইউনেস্কোর কাছে আবেদন জানালো কেন্দ্রীয় সরকার। এরমধ্যে পূর্ব ভারতে রয়েছে তিনটি কেন্দ্র, যার একটি এরাজ্যের বিশ্বভারতী। শনিবার মহাকরণে একথা জানান রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ। সে কারণে ভবিষ্যতে বিশ্বভারতীসহ শান্তিনিকেতন-শ্রীনিকেতন এলাকায় কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিধিনিষেধ আরোপের প্রয়োজন হবে।...

>>>

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট: ২৬শে ফেব্রুয়ারি – প্রিয় বন্ধুকে সাহায্য করতে মুখ ঢাকতে হয় নাকি ? —'কিসের সাহায্য? আরে বিশ্বাস করুন, ছিঃ। আমরা ঐ সব করি না, ওটা সাজানো ছবি। আমাকে ক্যামেরাম্যান আলাপ জমিয়ে বললো, মুখে রুমাল বেঁধে ছবিটা করে দেখবে কেমন লাগে। আর সেই ছবি যে আমার সর্বনাশ করতে আনন্দবাজার করলো সেটা তো বুঝিনি।' ...'কি করবো ? আমাকে বললো তুই রুমালে মুখ ঢাক। এমনকি কি করে জানলার কাছে গিয়ে কাগজ দেবো তাও দেখিয়ে দিলো।'...

>>>

নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২৬শে ফেব্রুয়ারি— রেল বাজেটে ১ লক্ষ ৭৫হাজার শূন্যপদ পূরণের ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাকরি প্রার্থী যুবক যুবতীদের সঙ্গে রীতিমতো প্রতারণা করা হয়েছে বলে মনে করছেন এ রাজ্যের যুবক যুবতীরা। সম্পূর্ণ অবাস্তব ও ভিত্তিহীন এই চমকের তীব্র প্রতিবাদ জানালেন তাঁরা। এক বিবৃতিতে ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের সম্পাদক আভাস রায়চৌধুরী ও সভাপতি প্রতীম ঘোষ ২০১১ সালের রেল বাজেটকে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রচারের ঢক্কানিনাদ আখ্যা দিয়ে একে প্রতিশ্রুতির চমক বলে মন্তব্য করেন।...

>>>

নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২৬শে ফেব্রুয়ারি — দক্ষ প্রশাসক হিসাবে ভাবমূর্তি, তা সে যতই ঝুটা হোক, সামনে তো পশ্চিমবঙ্গের ভোট, অতএব মানুষের ভোট আদায়ে সেই ভাবমূর্তি নির্মাণের দায়বদ্ধতা আছেই। বিশেষ করে লক্ষ্যটা যখন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে অভিন্ন, যে করেই হোক বামফ্রন্ট সরকারকে হটাতে হবে।...

>>>

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য
লালগড়, ২৬শে ফেব্রুয়ারি- সেই তন্ময় রায় এবার নেতাইয়ের 'গ্রামবাসী' সেজে সি বি আই এর তদন্তকারী আধিকারিকদের সামনে বললেন, 'সেদিন সকালে মানুষের জমায়েত ছিল স্বতঃস্ফূর্ত'। তদন্তকারী দলের জনৈক সদস্য তন্ময় রায়ের বলা সেদিনের ঘটনার বিবরণ এরপর নোট করে নিলেন।...

>>>

নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২৬শে ফেব্রুয়ারি — গরিব পরিবারের সব শিশুরা বাড়িতে পড়াশোনায় সাহায্য পায় না, তাই স্কুলেই তাদের যতো বেশি সম্ভব সহায়তা করার জন্য শিক্ষকদের অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শনিবার পূর্ব যাদবপুরের পঞ্চসায়রে একটি প্রাথমিক স্কুলের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।...

>>>

নিজস্ব প্রতিনিধি
জামুড়িয়া, ২৬শে ফেব্রুয়ারি — শেষমেশ রেলমন্ত্রী নিজে এলেন না। পাঠালেন তাঁর হয়ে কেন্দ্রের জাহাজ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়কে। শনিবার মুকুল রায় চুরুলিয়ায় এসে মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ স্মৃতিভবনের কার্নিসে 'ফলক' ঝুলিয়ে উদ্বোধন করলেন চুরুলিয়া-বারাবনী নতুন রেল লাইন পাতার কর্মসূচীর। মাত্র ৯ কিলোমিটার রেল লাইন পাতা হবে। রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে এনেছিলেন মন্ত্রী। স্মৃতিভবনের দোতলায় অনুষ্ঠান হলো।...

>>>

সত্যেন সরদার
পুরুলিয়া, ২৬শে ফেব্রুয়ারি— পশ্চিমবঙ্গে এবারের বিধানসভা নির্বাচন বামপন্থীদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সারা ভারতের গণ-আন্দোলনের স্বার্থেই এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে রাজ্যে অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শনিবার পুরুলিয়া শহরের নবোদয় হরিপদ সাহিত্যমন্দিরের প্রাঙ্গণে বামফ্রন্টের এক কর্মীসভায় এই কথা বলেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। ...

>>>

নিজস্ব প্রতিনিধি 
পুরুলিয়া, ২৬শে ফেব্রুয়ারি— ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মুখেই ঝালদায় একদিনে ৭জন বামপন্থী আন্দোলনের নেতা ও কর্মীকে খুন করে দিলো মাওবাদীরা। মাওবাদীরা ফতোয়া দিয়েছিলো কলেজ নির্বাচনেও এস এফ আই—র হয়ে কেউ প্রচার করলে তাঁকে প্রাণে বাঁচতে হবে না।...

>>>

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর, ২৬শে ফেব্রুয়ারি — শনিবার সন্ধ্যায় ফের ট্রেনে আগুন লাগলো খড়্গপুর স্টেশনের অদূরে। খড়্গপুর থেকে দুই ইঞ্জিনের কয়লা বোঝাই একটি মালগাড়ি ওড়িশার ভদ্রকে যাচ্ছিল। নিমপুরা হয়ে বেনাপুর স্টেশনের আগেই মালগাড়ির প্রথম ইঞ্জিনে আগুন লাগে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ। রাত পর্যন্ত দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।...

>>>

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বর্ধমান, ২৬শে ফেব্রুয়ারি — বামপন্থীদের বিরুদ্ধে বহুমুখী হিংস্র আক্রমণ নামিয়ে এনেছে উগ্র দক্ষিণপন্থী ও উগ্র বামপন্থী শক্তি। এদের পাশে দাঁড়িয়েছে সন্ত্রাসের শক্তি ও বেতনভুক বুদ্ধিজীবীরা। সংবাদমাধ্যমও বিভিন্ন স্তরের রাজনৈতিক দল ও মিলিত হয়ে বামপন্থীদের ধ্বংস করতে চাইছে। তার জন্য খবর তৈরি করা হচ্ছে।...

>>>

নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২৬শে ফেব্রুয়ারি- রিজার্ভ ব‌্যাঙ্কের কোনোরকম অনুমোদন ছাড়াই সম্পূর্ণ অবৈধ ও বেআইনীভাবে এরাজ্যে আমানত সংগ্রহ করছে ওয়ারিস ফিনান্স ইন্টারন‌্যাশনাল লিমিটেড এবং বিশাল ফিনলিস লিমিটেড নামে দুটি সংস্থা। রিজার্ভ ব‌্যাঙ্কের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে এই দুটি সংস্থায় টাকা জমা না রাখার জন্য জনসাধারণের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে রিজার্ভ ব‌্যাঙ্ক জানিয়েছে যে, কোনো নন-ব‌্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা রাখলে তার পরিশোধ সম্পর্কে রিজার্ভ ব‌্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া কোনো গ‌্যারান্টি দেয় না।...

>>>

মতাম

No comments: